সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় আইন ও সংখ্যালঘু কমিশন গঠিত হবে

সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় আইন ও সংখ্যালঘু কমিশন গঠিত হবে
লিখেছেন অনলাইন ডেস্ক at November 9, 2018 ক্যটাগরিসমূহ ট্যগসমূহ
5

0

0

সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, প্রত্যেক এলাকার সকল স্তরের রাজনৈতিক নেতৃত্বের দায়িত্ব সে এলাকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার। দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে একটি বৈষম্যবিরোধী আইন ও সংখ্যালঘু কমিশন গঠিত হবে। পাকিস্তান শাসনামল থেকেই সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চলে আসছে, যা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। বিভিন্ন ক্ষেত্রেই এখন আমাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার প্রকাশ ঘটছে।

মন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে সারাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও সরকার এর কোনো দায় না নিয়ে বরং দেশে কোন ঘটনা ঘটে নাই বলে প্রচারণা চালিয়েছিল। এখনো পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রচারণায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে না।

তিনি বলেন, জামায়াত বিএনপি এদেশে ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশে একটি অশ্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সেই ঘটনার অবসান ঘটানো হয়েছে। তবে এখন সমাজের বিভিন্ন স্থানে ঘাপটি মেরে থাকা সাম্প্রদায়িক ব্যক্তিরা বিভিন্ন জায়গায় সহিংস ঘটনা ঘটাচ্ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস কাবের ভিআইপি লাউঞ্জে মানবাধিকার সংগঠন শারি’র আয়োজনে ‘জাতীয় নির্বাচন ২০১৮ ও সংখ্যালঘু নিরাপত্তা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় রাশেদ খান মেনন এসব কথা বলেন।

শারি’র নির্বাহী পরিচালক প্রিয় বালা বিশ্বাসের সভাপতিত্বে আলোচনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, জাতীয় প্রেস কাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, মানবাধিকারকর্মী ড. মেঘনা গুহ ঠাকুরতা, দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান, দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের যুগ্ম সম্পাদক বিভুরঞ্জন সরকার, বাংলাদেশ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সভাপতি নির্মল রোজারিও।

দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সংখ্যালঘু নির্যাতন সংক্রান্ত ধারনাপত্র উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল।

অনুষ্ঠানে দিনাজপুর এবং বরিশালে ২০০১ এবং ২০১৪ সালে সংঘটিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের এলাকার থেকে নির্যাতনের শিকার রনজিত কুমার রায়, পুরেন দাস, সংবাদকর্মী কল্যাণ কুমার চন্দ, সংবাদকর্মী আজহারুল আজাদ জুয়েল এবং খালেদা আক্তার হেনা তাদের নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন। বরিশালের উজিরপুরের নির্যাতিত রনজিত কুমার রায় তার বক্তব্য রাখার সময় অঝোরে কেঁদে ফেলেন। এ সময় সমগ্র অনুষ্ঠানস্থলে পিনপতন নিরবতা নেমে আসে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, এখন পর্যন্ত দেশে জাতীয় নির্বাচনের সময় নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব হয়নি। এটা নির্বাচনী কাজের সঙ্গে জড়িতদের ব্যর্থতা। সংখ্যালঘুদের হতাশ হলে চলবে না, নিজেদের দাবি আদায়ে নিজেদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে।

সুলতানা কামাল বলেন, আগামী নির্বাচনে কোনো সাম্প্রদায়িক ব্যক্তিকে কেউ মনোনয়ন দিবেন না। কারণ, ওই সকল সাম্প্রদায়িক ব্যাক্তিরাই সাম্প্রদায়িকতা ছড়ায়। যদি দেওয়া হয়, তাহেলে তাকে প্ররোধ করার জন্য তিনি সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান। নির্বাচনের সময় সংখ্যালঘু নির্যাতিত হলে প্রতিরোধে যা প্রয়োজন সেই ব্যবস্থাই গ্রহণ করতে হবে।

তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠি ক্ষমতায় থাকায় তখনকার সংখ্যালঘু নির্যাতনের কোনো বিচার তারা করেনি। কিন্তু ২০১৪ সালে কি হলো। তখনতো স্বাধীনতার স্বপক্ষ দাবিদার শক্তি ক্ষমতায় তারা কেন সেদিনের নির্যাতনের ব্যাপারে কোনো বিচার আজ পর্যন্ত করল না।

তিনি বলেন, ক্ষমতায় গেলে সকল দলের চরিত্রই এক। আর এজন্য আমরা হাল ছেড়ে দেব না। কারণ বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়ে দেশ স্বাধীন করতে অবদান রেখেছি। সেই অবদানের বলেই আগামী দিনেও সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিরোধে সচেষ্ট থাকব।

অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, নির্বাচন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের জন্য কোনো উত্সব নয়, বিপদের বার্তা নিয়ে আসে। ২০০১ সালের নির্বাচনের পরে সংখ্যালঘুদেও উপর হামলার বিষয়ে তত্কালীন সরকারের ২৯জন মন্ত্রী সরাসরি জড়িত ছিলেন। এ ব্যাপারে একটি কমিশনও গঠিত হয়েছিল। কিন্তু কোনো অজ্ঞাত কারণে তা আর আলোর মুখ দেখেনি।

তিনি বলেন, কোনো সাম্প্রদায়িক ব্যক্তিকে কেউ মনোনয়ন দিলে সেই এলাকার সংখ্যালঘুরা তাকে ভোট দিবে না। আর এ ব্যাপারে যদি কোনো ঘটনা ঘটে সেই দায় দায়িত্ব ওই দলকেই নেত হবে।

নির্বাচনী প্রচারনায় সংখ্যালঘু নিরাপত্তা থাকতে হবে: রাশেদ

নির্বাচনী প্রচারনায় সংখ্যালঘু নিরাপত্তা থাকতে হবে: রাশেদ
By OneBanglaNews – November 8, 2018 @12:02 pm25
Share on Facebook Tweet on Twitter

ঢাকা সংবাদদাতা: সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, প্রত্যেক এলাকার সব স্তরের রাজনৈতিক নেতৃত্বের দায়িত্ব সে এলাকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেয়া। দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে একটি বৈষম্য বিরোধী আইন ও সংখ্যালঘু কমিশন গঠিত হবে। পাকিস্তান শাসনামল থেকেই সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চলে আসছে, যা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে মানবাধিকার সংগঠন শারি’র আয়োজনে “জাতীয় নির্বাচন ২০১৮ ও সংখ্যালঘু নিরাপত্তা” শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রেই এখন আমাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার প্রকাশ ঘটছে। ২০০১ সালের নির্বাচনে সারাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও সরকার এর কোন দায় না নিয়ে বরং দেশে কোন ঘটনা ঘটে নাই বলে প্রচারনা চালিয়েছিল। এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রচারনায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে না।
তিনি বলেন, জামায়াত বিএনপি এদেশে ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশে একটি অশ্বস্তির পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সেই ঘটনার অবসান ঘটানো হয়েছে। তবে এখন সমাজের বিভিন্ন স্থানে ঘাপটি মেরে থাকা সাম্প্রদায়িক ব্যাক্তিরা বিভিন্ন জায়গায় সহিংস ঘটনা ঘটাচ্ছে।

শারি’র নির্বাহী পরিচালক প্রিয় বালা বিশ্বাসের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, মানবাধিকারকর্মী এ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, মানবাধিকারকর্মী ড. মেঘনা গুহ ঠাকুরতা, দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান, দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের যুগ্ম সম্পাদক বিভুরঞ্জন সরকার, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ সভাপতি নির্মল রোজারিও।

দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সংখ্যালঘু নির্যাতন সংক্রান্ত ধারনাপত্র উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল। অনুষ্ঠানে দিনাজপুর এবং বরিশালে ২০০১ এবং ২০১৪ সালে সংঘটিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের এলাকার থেকে নির্যাতনের শিকার রনজিত কুমার রায়, পুরেন দাস, সংবাদকর্মী কল্যাণ কুমার চন্দ, সংবাদকর্মী আজহারুল আজাদ জুয়েল এবং খালেদা আক্তার হেনা তাদের নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, এখনও পর্যন্ত দেশে জাতীয় নির্বাচনের সময় নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব হয়নি। এটা নির্বাচনী কাজের সাথে জড়িতদের ব্যর্থতা। সংখ্যালঘুদের হতাশ হলে চলবে না, নিজেদের দাবি আদায়ে নিজেদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে।

মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, আগামী নির্বাচনে কোন সাম্প্রদায়িক ব্যাক্তিকে কেউ মনোনয়ন দিবেন না। কারন ওই সব সাম্প্রদায়িক ব্যাক্তিরাই সাম্প্রদায়িকতা ছড়ায়। যদি দেয়া হয়, তাহলে তাকে প্রতিরোধ করার জন্য তিনি সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

নির্বাচনী ইশতেহারে সংখ্যালঘু নিরাপত্তা থাকতে হবে: মেনন

নির্বাচনী ইশতেহারে সংখ্যালঘু নিরাপত্তা থাকতে হবে: মেনন
স্টাফ ক‌রেসপ‌ন্ডেন্ট
৮ নভেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার
প্রকাশিত: 4:27 আপডেট: 4:39

নির্বাচনী ইশতেহারে সংখ্যালঘু নিরাপত্তা থাকতে হবে: মেনন
রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে সংখ্যালঘু নিরাপত্তার বিষয় উল্লেখ থাকতে হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। ‌তি‌নি বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে এবং নির্বাচনের পরে সংখ্যালঘুদের উপর নানা হয়রানি হয়ে থাকে। তাই সকল রাজনৈতিক দলগুলো‌কে এ ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৮ ন‌ভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ভিআই‌পি লাউঞ্জে ‘শারি’র আয়োজনে ‘জাতীয় নির্বাচন ২০১৮ ও সংখ্যালঘু নিরাপত্তা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চলছে, বিশেষ করে ২০০১ সালের নির্বাচনের পর সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের মাত্রা প্রকট আকার ধারণ করেছে। নির্বাচনের যে প্রার্থী জয়ী হোক না কেন তার নিজ এলাকায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নজর রাখতে হবে।’

সংখ্যালঘু আইন প্রয়োজন দাবি করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সচেতন বলেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘুর পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের নিরাপত্তার জন্য অনেক আইন রয়েছে, তাই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য সংখ্যালঘু আইন করতে হবে।’

আলোচনা সভায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হোক বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন রোধে রাষ্ট্র, নির্বাচন কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে সচেতন হতো হবে। এবং প্রতিটি এলাকায় নিজ নিজ থেকে সভা করে সচেতনতা বাড়াতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ২৮এর ৪ ধারায় বলা আছে নারী-শিশু ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী আইন হতে পারে। এখন বাংলাদেশে নারী-শিশুদের নির্যাতন রোধে আইন রয়েছে তাই সংখ্যালঘুদের নির্যাতন রোধেও আইন হতে পারে।’

মানবাধিকার কর্মী এ্যাড. সুলতানা কামাল বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সময়ে সংখ্যালঘুরা জীবন মরণ খেলায় দোলে। নির্বাচন কারো জন্য হয় উৎসবমূখর আবার কারো জন্য হয় আতঙ্কের। তাই সকল রাজনৈতিক দলগুলো সংখ্যালঘুদের উপর বিশেষ নজর রাখতে হবে।’

বিএনপি সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে উদাসিন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিএনপি সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে উদাসিন তাদের যেন কোন বোধ নেই।’

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে সংখ্যালঘুদের কাছে ভোট ভিক্ষা করতে গিয়ে বলে আমাদের সহযোগিতা করুন আমরা আপনাদের মঙ্গলে কাজ করবো কিন্তু নির্বাচনের পর দেখা যায় চাঁদাবাজি, আর ভোগ দখলে মরিয়া।’

সভায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদাবাদ ইয়াসমিন বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করা দূর্ভাগ্যজনক। এই দেশ স্বাধীন হয়েছে সবার জন্য, কিন্তু বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ কেনো অস্তিত্বের জন্য লড়াই করতে হবে।’

তিনি নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘সামনের জাতীয় নির্বাচনে যেনো কোনে দল ধর্মকে ব্যবহার করে ফায়দা লুটতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে, এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য সকলকে নিজ নিজ থেকে ভুমিকা পালন করতে হবে।’

দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- মানবাধিকার সংগঠন রিইব এর নির্বাহী প্রধান ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, বাংলাদেশ হিন্দু- বৌদ্ধ- খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুনীরুজ্জামান প্রমুখ।

‌ব্রে‌কিং‌নিউজ/এএইচএস/জেআই

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘু নির্যাতন নয়

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘু নির্যাতন নয়
নভেম্বর ৮, ২০১৮
Share on Facebook Tweet on Twitter

সুমন দত্ত: জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘুদের ওপর যেন হামলা না হয় সে ব্যাপারে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে কঠোর পদক্ষেপ নেবার আহবান জানিয়েছে বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা শারি।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ভিআইপি লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত এক গোল টেবিল আলোচনা এই আহবান জানানো হয়। আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী জনাব রাশেদ খান মেনন । অনুষ্ঠান শুরু করেন উপস্থাপক শ্যামল দত্ত ও ড. মেসবা কামাল।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানাদাশ গুপ্ত। এছাড়া প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রিইবের নির্বাহী প্রধান মেঘনা গুহঠাকুরতা, দৈনিক সংবাদের সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান, দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক জনাব সোহরাব হাসান, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও।

রানা দাশ গুপ্ত বলেন, নির্বাচন এলেই সাম্প্রদায়িক উসকানি দিতে থাকেন অনেকে। আমরা ভুলি নাই সেই সাবাস বাংলাদেশের কথা, যেখানে একজন রাজনীতিবিদ দলকে জেতাতে এক হাতে কোরান আর অন্য হাতে গীতা নিয়ে বলেন আপনারা কাকে জেতাতে চান? জাতি এসব ভুলে নাই যে, একজন দল প্রধান বলেন, অমুক দল জিতলে মসজিদ থেকে আযান নয় উলু ধ্বনি আসবে, শঙ্খ ধ্বনি আসবে। এবার যাতে এসব না হয়। সে দাবি জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, সরকার ১ থেকে ২ পারসেন্ট ভোটের জন্য জেএসসি পরীক্ষা স্থগিত করতে পারেন। কিন্ত ১০ থেকে ১১ পারসেন্ট ভোটের জন্য তিনি কি পদক্ষেপ নেবেন। তা জানাবেন।

খ্রীস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও বলেন, সুবল দাশ নামের আমাদের সম্প্রদায়ের এক লোক আওয়ামীলীগ করতেন বলে হামলার শিকার হোন। আমরা বিএনপির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেনের কাছে গেলে তিনি বলেন, আমার কাছে এলেন কেন? চলে যান শেখ হাসিনার কাছে। এমন আচরণ তাকে হতাশ করেছিল বলে তিনি জানান।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিক কল্যাণ কুমার চন্দ বলেন, আমাকে মানসিক ভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল। আমার বিয়েতে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছিল এলাকার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত দুর্বৃত্তরা। আমি বিষয়টি বিএনপিকে জানালে আমার চাঁদা দিতে হয়নি ঠিকই কিন্তু ৫০ জনকে ভোজন করাতে হয়েছিল।

সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় আইন করতে হবে : মেনন

সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় আইনের করতে হবে : মেনন
জাগরণ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:৪৬, ৮ নভেম্বর ২০১৮

2
A- A A+

বর্তমান সরকার সংখ্যালঘুদের নিরপত্তায় সচেতন হওয়ায় তাদের সংখ্যা বাড়ছে উল্লেখ করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, এখন তাদের নিরাপত্তার জন্য আইন করতে হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ‘জাতীয় নির্বাচন ২০১৮ ও সংখ্যালঘু নিরাপত্তা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে ‘শারি’ নামের একটি সংগঠন।

মন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চলেছে। বিশেষ করে ২০০১ সালের নির্বাচনের পর সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের মাত্রা প্রকট আকার ধারন করে। তবে বর্তমান সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সচেতন। তাই বাংলাদেশে সংখ্যালঘুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের মানুষের নিরাপত্তার জন্য অনেক আইন রয়েছে, তাই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য সংখ্যালঘু আইন করতে হবে।’

এসময় মন্ত্রী রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইস্তেহারে সংখ্যালঘু নিরাপত্তার বিষয় জোর দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘ নির্বাচনকালীন এবং নির্বাচনের পরে সখ্যালঘুদের উপর নানা হয়রানি হয়ে থাকে। তাই সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত এব্যাপারে খেয়াল রাখা।’

দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হোক বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন রোধে রাষ্ট্র, নির্বাচন কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে সচেতন হতে হবে। প্রতিটা এলাকায় নিজ নিজ থেকে সভা করে সচেতনতা বাড়াতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ২৮.৪ বলা আছে নারী- শিশু ও পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠীর জন্য প্রয়োজন অনুযাই আইন হতে পারে। এখন বাংলাদেশে নারী- শিশুদের নির্যাতন রোধে আইন রয়েছে তাই সংখ্যালঘুদের নির্যাতন রোধেও আইন হতো পারে।

মানবাধিকার কর্মী অ্যাড. ‘সুলতানা কামাল বলেন, নির্বাচনকালীন সংখ্যালঘুরা জীবন মরণ খেলায় দোলে। নির্বাচন কারো জন্য হয়ে উৎসব মূখর আবার কারো জন্য আতঙ্ক। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে সংখ্যালঘুদের উপর বিশেষ নজর রাখতে হবে।

সভায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করা দুর্ভাগ্যজনক। এই দেশ স্বাধীন হয়েছে সবার জন্য কিন্তু বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে কেনো অস্তিত্বের জন্য লড়াই করতে হবে।
তিনি নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘সামনের জাতীয় নির্বাচনে যেনো কোনে দল ধর্মকে ব্যবহার করে ফায়দা লুটতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য সকলকে নিজ নিজ থেকে ভুমিকা পালন করতে হবে।’

আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন, মানবাধিকার সংগঠন রিইব -এর নির্বাহী প্রধান ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, বাংলাদেশ হিন্দু- বৌদ্ধ- খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুনীরুজ্জামান প্রমুখ।

/জেডএস

নির্বাচন ঘিরে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন বাড়ার আশংকা

নির্বাচন ঘিরে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন বাড়ার আশংকা
নভেম্বর ১১, ২০১৮

সময়ের বিবর্তনে ঘুরে ফিরে আবারও এসেছে জাতীয় নির্বাচন। বিএনপি চরম আপত্তির মধ্যেই তপশীল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগ মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়েছে। বইছে নির্বাচনী আমেজ। হাট-বাজার, দোকান-পাট সর্বত্রই নির্বাচনী আলোচনা। সর্বত্র যেন একটা নতুনের বার্তা।
তবে এরই মাঝে টকশো আলোচনা টেবিলে নির্বাচনকে অভিশাপ হিসেবে দেখছে কেউ কেউ। ইতিপূর্বে জাতীয় নির্বাচন অনেকের পিতা-মাতা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজনকে নিয়ে গেছে। মা-বাবার সামনে মেয়ের ইজ্জত, পরিবারের সবার সামনে নারী সদস্যের ইজ্জতও নিয়েছে এই নির্বাচন। সেদিন খুব বেশি দূরে নয়, মাত্র দেড় যুগ আগে। ২০০১ এর ১ অক্টোবর নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের পরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের সংখ্যালঘুদের ওপর যে অত্যাচার আর নির্যাতন হয়েছে, তার কালিমা শত বছরেও মন থেকে মুছবে না। আবার অনেকে বলছেন এমন নির্বাচন যেন আর না আসে। কিন্তু তারপরেও নির্বাচনতো হচ্ছে এবং হবে। দেশের সংখ্যালঘুরা আর নির্যাতনের শিকার হবে না এই নিশ্চয়তা কে দিবে?
২০০১ এবং ২০১৪’র নির্বাচন সংখ্যালঘুদের জন্য যেন অভিশাপ ছিল। ওই নির্বাচনের পর ক্ষমতাসীনদেও এবং প্রতিপক্ষের হিংসাত্মক তৎপরতায় দেশের সংখ্যালঘু, ভিন্নমতাবলম্বী ও শিক্ষকরা পর্যন্ত রেহাই পায়নি। প্রশাসনের অনৈতিক আনুকূল্য ও দলীয় ক্যাডার বাহিনীর মাধ্যমে এ সময় এলাকায় ব্যাপক লুটতরাজের ঘটনা ঘটে। এ সময় অনেকেই ক্ষমতাসীন এবং প্রতিপক্ষের বাহিনী দ্বারা বর্বরোচিত হামলা, নির্যাতনে আহত হয়। ক্ষমতাসীন এবং প্রতিপক্ষের লোলুপ দৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে এলাকা ছেড়ে যায় বহু সংখ্যালঘু পরিবার। বাসে অগ্নিসংযোগ, ধানের পালার আগুন, মন্দিরও পুড়িয়ে দেয়া, মুর্তি ভেঙ্গে ফেলা, সংখ্যালঘু নারীদের উপর লোলুপ দৃষ্টি, ফলে শেষাবধী নারীদের উপর নির্যাতন কি হয়নি এই সময়কালে।
১৯৭১ এ অসাম্প্রদায়ীকতার ভিত্তিতে বাংলাদেশ নামের এই দেশটির জন্ম। মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান সকলেই যুদ্ধ করে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম দেয়। কথা ছিল সকলে একভাবে বসবাস করবে এখানে। কিন্তু বাস্তব কতটা নিষ্ঠুর। ২০০১ এর নির্বাচনের পরে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সেই সহমর্মিতা যে ছিল না তার হিসাব কি কেউ রেখেছে। রাখে নাই। রাখবে না। কারণ এটি ছিল দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের একটি করুন ইতিহাস। যা বাস্তবে সম্ভব হয়না, তাই হয়েছে ওই সময় ক্ষমতাসীনদের সহায়তায়।
২০০১ এর ১ অক্টোবর রাতেই নির্বাচনের ফলাফল আসা শুরু হয়ে যায়। রাত যতই বাড়ে ফলাফলে একটি জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে থাকে, সাথে সাথে বাড়তে থাকে বিভিন্ন এলাকায় নির্যাতন, অত্যাচার। বিশেষ করে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় ওই রাত থেকেই শুরু হয়ে যায় নির্যাতন। এমন নির্যাতন যেন কেউ আর কখনো দেখেনি। ২ অক্টোবর থেকে সংখ্যালঘু মেয়েদের ওপর পাশবিক নির্যাতন শুরু হয়। পিতার সামনে কন্যা, ভাইয়ের সামনে বোন পাশবিক নির্যাতিত হতে থাকে। বলার যেন কোন ভাষা নেই। এমনি একই ভাবে চলে এসেছে ২০০১ সালের ২ অক্টোবর থেকে ২০০৭ সালের ১০ জানুয়ারী পর্যন্ত।
এমন নির্যাতনের শিকার লাখো মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিল ওই নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাদের মতামত প্রকাশ করবে। কিন্তু বাস্তব বড়ই কঠিন। বিএনপি-জামাত জোট নির্বাচনের নামে তালবাহানা শুরু করে দিলে ১/১১ এর মত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আর এই ১/১১ হয় বিএনপি-জামাত জোটের জন্য আশির্বাদ। দীর্ঘ ২ বছর জরুরী অবস্থার মধ্যে থেকে দেশবাসীর নাভিশ্বাস উঠে গেছে। তারা আর এই পরিস্থিতি চায় না। চায় একটি সুষ্ঠ ও সুন্দর নির্বাচন। তারা ভুলে গেছে ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত শাসনের নামে চলমান দুঃশাসন। ফলে বিএনপি-জামাত জোট আবারও নতুন করে ভোটের মাঠে নামে। নতুন করে দেশবাসীর কাছে ভোট প্রার্থনা করে। ভুলিয়ে দিতে চেয়েছিল তাদের দুঃশাসনের কথা। মনে করিয়ে দিয়েছে ১/১১ এর পরের সরকারের কর্মকান্ডের কথা। আসলে কি তা তারা পারছেন। কারণ যে মা তার সন্তান হারিয়েছে, যে স্ত্রী তার স্বামী হারিয়েছে কিংবা যে নারী তার পরম আত্মীয়দের সামনে নিজের ইজ্জতকে হারিয়েছে। দেখতে হয়েছে মায়ের সামনে মেয়ের ওপর পাশবিক নির্যাতন, স্বামীর সামনে স্ত্রী’র। কি করে সংখ্যালঘুরা সেই দিনগুলোর কথা ভুলবে। মনের ভেতরের ছাই চাপা দেয়া আগুন বিচ্ছুরিত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।
দৈনিক জনকণ্ঠ নির্বাচনের পূর্বেই ২০০১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর এক প্রতিবেদনে বলেছিল “নির্বাচন এলেই বরিশালের বানারীপাড়ার ৪টি গ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিএনপি’র সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ে; তারা সহজে ভোট দিতে পারে না; ইতোমধ্যেই তান্ডব শুরু হয়ে গেছে; অনেকেই গ্রাম ছেড়েছেন।” কিংবা ওই বছরের ৯ সেপ্টেম্বর পিরোজপুরে এক জনসভায় সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্য সংবাদে ছাপা হয়। তিনি বলেছিলেন “আওয়ামীলীগ আবার ক্ষমতায় গেলে দেশে কেউ ধর্মকর্ম করতে পারবে না”। এমন এক উস্কানী মূলক বক্তব্য অথবা ২০০১ সেপ্টেম্বর দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত “ভোটকেন্দ্রে না যেতে সাঈদী সমর্থকদের হুমকি ॥ পিরোজপুরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটাররা ভীত সন্ত্রস্থ” অথবা ওই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত “একদিকে সর্বহারাদের অত্যাচার, অন্যদিকে জামাতের হুমকি।
পিরোজপুর নাজিরপুরের সংখ্যালঘুদের ভোট দিতে না পারার আশংকা” কিংবা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০০১ এ দৈনিক জনকন্ঠে প্রকাশিত “ ভোলার তিনটি উপজেলার সংখ্যালঘুরা আতংকে” অথবা ২৪ সেপ্টেম্বর দৈনিক জনকণ্ঠ “ভোলা ও ফেনীতে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ॥ সংখ্যালঘুদের রক্ষার চেস্টা করারয় দৌলতখানে যুবককে জবাই করে খুন” কিংবা ৩০ জুন ২০০১ এ দৈনিক জনকন্ঠে প্রকাশিত “দেশ ত্যাগ করার হুমকি ॥ সংখ্যালঘুদের আতংক কাটেনি ॥ বরিশাল, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষিরা ও জয়পুরহাটে বিএনপি ক্যাডারদের হামলা” সংক্রান্ত রিপোর্টগুলো ছাপা হওয়ার পরেও তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনই টনক নড়েনি। তারা এ বিষয়টিকে নিছক গুজব কিংবা বানোয়াট বলে সে সময় প্রচার করেছিলেন। এ পুরো রিপোর্টগুলোই ছিল প্রাক নির্বাচনী। যদি তখন এ বিষয়গুলোর ওপর গোয়েন্দা নজরদারী জোরদার করে ব্যাবস্থা নেয়া হতো তাহলে হয়ত বা নির্ব্চানোত্তর এত বেশি নির্যাতিত হতো না সংখ্যালঘুরা। এতো গেল প্রাক নির্বাচনী নির্যাতন।
এবারে নিচে ২০০১ এর নির্বাচনোত্তর কিছু এলাকার কিছু নির্যাতনের বর্ননা দেয়া হলো, যা ওই সময় বিভিন্ন পত্রিকার পাতায় উঠে আসলেও প্রশাসন কিংবা সরকার এ ব্যাপারে কোন ভ্রুক্ষেপই করেনি। দৈনিক জনকণ্ঠ ৪ অক্টোবর ২০০১ “নির্বাচনের পরপরই ভোলার বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক সহিংসতা, আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের বাড়ি ঘরে হামলা ভাংচুর করছে ॥ সন্ত্রাসীদের প্রধান টার্গেটে পরিনত হয়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়।” ৫ অক্টোবর দৈনিক জনকন্ঠ ছেপেছে “সংখ্যালঘুদের দোকানপাট ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে। উজিরপুরে সংখ্যালঘুদের উপর বিএনপির নারকীয় তান্ডব চলছে ॥ মোট অঙ্কের চাঁদা দাবী তরুনীরা আতঙ্কে”। দৈনিক সংবাদ ২০০১ সালের ১৭ অক্টোবর ছেপেছে “নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাসে স্বরূপকাঠীর সংখ্যালঘু ও আ’লীগ নেতা-কর্মীরা এলাকা ছাড়া”। ৬ অক্টোর দৈনিক প্রথম আলো ছেপেছে “রাজনৈতিক ক্যাডারদের হামলায় চট্টগ্রামে সংখ্যালঘুরা দিশেহারা ॥ গ্রাম ছেড়ে পরিবার পরিজন নিয়ে শহরে পাড়ি দিচ্ছেন অনেকে”।
৭ অক্টোর ২০০১ দৈনিক সংবাদ ছেপেছে “নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় পিরোজপুরে শতাধিক লোক আহত ॥ অনেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে”। ওই একই তারিখে দৈনিক যুগান্তর ছেপেছে “বাগেরহাটের গ্রামের হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়া”। এদিন দৈনিক প্রথম আলো ছেপেছে “হামলা লুটপাট অগ্নিসংযোগ চলছেই ॥ কুমিল্লার গ্রামে গ্রামে সন্ত্রাস”। ৮ অক্টোবর ২০০১ দৈনিক জনকন্ঠ ছেপেছে “বিএনপির শুদ্ধি অভিযানে বরিশালে দুই উপজেলায় সংখ্যালঘুরা এলাকা ছেড়েছে ॥ মন্দির ভাঙচুর, বাড়ীতে আগুন লুটপাট ॥ তরুনীদের অনেকেই স্কুল কলেজে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছে”। ১০ অক্টোবর দৈনিক জনকণ্ঠ ছেপেছে “দু’টি জেলার ১৫ হাজার সংখ্যালঘু নারী-পুরুষ ঘরছাড়া।” ১৫ অক্টোবর ২০০১ দৈনিক জনকন্ঠ “সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চলছেই ॥ পিরোজপুরের গ্রামে মন্দির ভাঙচুর ॥ বরিশালে মা, মেয়ে, ননদ একত্রে লাঞ্ছিত”। ওই দিনই দৈনিক জনকন্ঠ লিখেছে “চেনা মানুষগুলোই তাদের সর্বনাশ করলো”। ২৪ অক্টোবর দৈনিক সংবাদ ছেপেছে “পিরোজপুরে নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতি ॥
সংখ্যালঘু আর আ’লীগ নেতা কর্মীরাই টার্গেট ॥ হামলা অব্যাহত ॥ পূজা না করার সিদ্ধান্ত”। ওই দিনেই দৈনিক জনকণ্ঠ ছেপেছে “সন্ত্রাসী হামলার ভয়ে সংখ্যালঘু গ্রামের গৃহবধূরা সিঁথিতে সিঁদুর দিচ্ছে না”। ২১ অক্টোবর ২০০১ দৈনিক জনকন্ঠ লিখেছে “রামশীলেই নয় মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামেও শত শত সংখ্যালঘু পরিবার আশ্রয় নিয়েছে ॥ ভবিষ্যত অনিশ্চিত”। এমন হাজারো রিপোর্ট ছাপা হয়েছে বিভিন্ন পত্রিকায়, কিংবা প্রচার করা হয়েছে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে। কিন্তু এর পরেও কি সরকার এ ব্যাপারে আদৌ কোন ব্যাবস্থা নিয়েছে।না নেয়নি। উপরন্তু সংখ্যালঘুরা এই নির্যাতনের প্রতিবাদে সারা দেশে অনাড়ম্বরে ঘট পূজার মাধ্যমে পূজা করার সিদ্ধান্ত নিলে পূনরায় তাদের ওপর শুরু হয় সরকারী সন্ত্রাস। নির্বাচনের পূর্ব থেকে হয়ে আসছিল দলীয় কর্মী সমর্থকদের হামলা, সন্ত্রাস আর এবার শুরু হয়ে গেল ক্ষমতায় থেকে সরকারের প্রশাসনকে ব্যবহার করে সন্ত্রাস। পূজা করতে হবে নাহলে বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করা হবে।
এ জাতীয় প্রশাসনিক হুমকিতে আবারো নিশ্চুপ হয়ে যায় সংখ্যালঘুরা। তারা বিএনপি-জামাতের চাপে কোথাও কোথাও পূজা করতে বাধ্য হলো। ৩ নভেম্বর ২০০১ দৈনিক সংবাদ ছেপেছে “মাকে সন্তুষ্ট করতে নয়, বিএনপিকে সন্তুষ্ট করতেই এই পূজা”। পিরোজপুরের বিভিন্ন পূজা মন্ডপে পূজারীরা তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটায় ঠিক এমনিভাবে। পূজা মন্ডপে ব্যানারও লিখে রেখেছিল ঠিক এভাবে। এমনি পরিস্থিতির শিকার হয়ে দেশের সংখ্যালঘুরা আবারো এদেশ আমার এই চিন্তায় বাড়ি ঘর তৈরি করেছে, আশায় বুক বেঁধেছে। ভুলে গেছে সব পুরনো হিসাব নিকাশ। নতুন করে বাঁচারা স্বপ্ন দেখতে যখনই শুরু করে ঠিক তখনই পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কায়দায় নাসিরনগর রংপুরে হামলার ঘটনা ঘটে।আবারও এসেছে নির্বাচন, নির্যাতন, এই আশংকায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে সংখ্যালঘুরা। নির্বাচনে উপরোক্ত রিপোর্টগুলো আর লিখতে হবে না এই নিশ্চয়তা কে দিবে? নির্বাচন এলেই দেশের সংখ্যালঘুরা হয়ে পড়ে বলির পাঠা। যেখানে যে ধরনের সমস্যা হোক তার শিকার হয়ে যায় সংখ্যালঘুরা। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পরেও এর ব্যতিক্রম হবে না, এই নিশ্চয়তা সরকারকেই দিতে হবে, বলেছিল দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়।
আবারও ২০১৪ সালে এসেছে তেমনি নির্বাচন। এবারের নির্বাচনের বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। ৭১ এর পরাজিত যুদ্ধাপরাধের মামলায় অভিযুক্ত জামায়াতকে সাথে নিয়ে ১৮ দলের নামে নাম সর্বস্ব কয়েকটি ইসলামপন্থী দলকে নিয়ে বিএনপি নির্বাচন বয়কট করেছে। কিন্তু তাতে কি? আর সেই নির্যাতনের আশঙ্কাও আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে সংখ্যালঘুদের জীবনে। ফলে যা হবার তাই হ’ল। ২০০১ এর নির্বাচনে যারা নির্যাতিত হয়েছে তারা পূনরায় নির্যাতনের আশংকায় ছিল এবং নির্বাচনের পরে কোন কোন জায়গায় নির্যাতিতও হয়েছে। ঘুরে ফিরে আবার আসে ২০১৪’র নির্বাচন। ২০১৩ সালের শেষের দিক থেকেই শুরু হয়ে যায় সারা দেশের সংখ্যালঘুদের উপর নির্মম নির্যাতন। বরিশালের আগৈলঝাড়া, পাবনার সাথিয়া, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, দিনাজপুরের বিরল, চিরিবন্দও সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আবরো সংখ্যালঘুদের উপর নেমে আসে খড়গ। সেই খড়গ থেকে বাঁচার জন্য অনেকেই দেশ ছেড়ে চলে গেছেন, আবার কেউ কেউ এলাকা ত্যাগ করে অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।
এমনকি যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডিত আসামি কাদের মোল্লার ফাঁসির রাত্রেও ভয়াবহ হামলার স্বীকার হয়।
এর পরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ, গাইবান্ধার আদিবাসী পল্লী কোথাও বাদ যায়নি।
দেশে যখন নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়, ঠিক তখনই ১/১১ এর জন্ম। যেখানে থাকবে না হানাহানি, বিশৃঙ্খলা। এই আশাবাদ নিয়েই ১/১১ এর জন্ম হলে দেশের সকল শান্তিপ্রিয় মানুষ সমর্থন জানাতে শুরু করেন। তত্ত্ববধায়ক সরকারও একে একে ভাল কাজগুলো করতে শুরু করে দেয়। দূর্নীতির মূলোৎপাদনে যে ভূমিকা রাখে তা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু বাঁধ সাধে নির্বাচন। নির্বাচনে সকল দলকে অংশগ্রহণ করাতে বিভিন্ন বিষয়ে সরকার নমনীয় হয়ে যান। দূর্নীতির সাথে জড়িতরা একে একে ছাড়া পেয়ে যায়। আবারও নির্বাচনে তারা অংশ নেয়ার মত প্রকাশ করে।
অতি সম্প্রতি দেশের সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার সুরক্ষা বিষয়ক সংগঠন শারির এক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বর্তমান সরকারের মন্ত্রী রাশেদ খাঁন মেনন তিনি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, এই গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন “সামনের নির্বাচনে আবারো সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার নির্যাতনের কালো থাবা নেমে আসবে।” এই আতঙ্ক এখনই শুরু হয়ে গেছে। এই আশংকা থেকে দেশের সংখ্যালঘুদের আশ্বস্ত করার দায়িত্ব বর্তমান সরকারের।
উত্তম কুমার রায় ও রঞ্জন বক্‌সী নিপু।

নির্বাচনী প্রচারনায় সংখ্যালঘু নিরাপত্তা থাকতে হবে

নির্বাচনী প্রচারনায় সংখ্যালঘু নিরাপত্তা থাকতে হবে
বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ৮, ২০১৮

ঢাকা : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, প্রত্যেক এলাকার সব স্তরের রাজনৈতিক নেতৃত্বের দায়িত্ব সে এলাকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেয়া। দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে একটি বৈষম্য বিরোধী আইন ও সংখ্যালঘু কমিশন গঠিত হবে। পাকিস্তান শাসনামল থেকেই সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চলে আসছে, যা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে মানবাধিকার সংগঠন শারি’র আয়োজনে “জাতীয় নির্বাচন ২০১৮ ও সংখ্যালঘু নিরাপত্তা” শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রেই এখন আমাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার প্রকাশ ঘটছে। ২০০১ সালের নির্বাচনে সারাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও সরকার এর কোন দায় না নিয়ে বরং দেশে কোন ঘটনা ঘটে নাই বলে প্রচারনা চালিয়েছিল। এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রচারনায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে না।

তিনি বলেন, জামায়াত বিএনপি এদেশে ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশে একটি অশ্বস্তির পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সেই ঘটনার অবসান ঘটানো হয়েছে। তবে এখন সমাজের বিভিন্ন স্থানে ঘাপটি মেরে থাকা সাম্প্রদায়িক ব্যাক্তিরা বিভিন্ন জায়গায় সহিংস ঘটনা ঘটাচ্ছে।

দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সংখ্যালঘু নির্যাতন সংক্রান্ত ধারনাপত্র উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল। অনুষ্ঠানে দিনাজপুর এবং বরিশালে ২০০১ এবং ২০১৪ সালে সংঘটিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের এলাকার থেকে নির্যাতনের শিকার রনজিত কুমার রায়, পুরেন দাস, সংবাদকর্মী কল্যাণ কুমার চন্দ, সংবাদকর্মী আজহারুল আজাদ জুয়েল এবং খালেদা আক্তার হেনা তাদের নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, এখনও পর্যন্ত দেশে জাতীয় নির্বাচনের সময় নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব হয়নি। এটা নির্বাচনী কাজের সাথে জড়িতদের ব্যর্থতা। সংখ্যালঘুদের হতাশ হলে চলবে না, নিজেদের দাবি আদায়ে নিজেদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে।

মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, আগামী নির্বাচনে কোন সাম্প্রদায়িক ব্যাক্তিকে কেউ মনোনয়ন দিবেন না। কারন ওই সব সাম্প্রদায়িক ব্যাক্তিরাই সাম্প্রদায়িকতা ছড়ায়। যদি দেয়া হয়, তাহলে তাকে প্রতিরোধ করার জন্য তিনি সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় আইন ও কমিশন গঠিত হবে: মেনন

সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় আইন ও কমিশন গঠিত হবে: মেনন
বিডিমর্নিং : বিডিমর্নিং ডেস্ক-
প্রকাশিত: ০৯ নভেম্বর ২০১৮, ০১:২৫ PM
আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৮, ০২:০২ PM
bdmorning Image Preview

‘প্রত্যেক এলাকার সকল স্তরের রাজনৈতিক নেতৃত্বের দায়িত্ব সে এলাকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়া। দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে একটি বৈষম্যবিরোধী আইন ও সংখ্যালঘু কমিশন গঠিত হবে। পাকিস্তান শাসনামল থেকেই সংখ্যালঘুদের উপর যে নির্যাতন চলে আসছে, তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই’ সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস কাবের ভিআইপি লাউঞ্জে মানবাধিকার সংগঠন শারি’র আয়োজনে ‘জাতীয় নির্বাচন ২০১৮ ও সংখ্যালঘু নিরাপত্তা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী আরো বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে সারাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও সরকার এর কোনো দায় না নিয়ে বরং দেশে কোন ঘটনা ঘটে নাই বলে প্রচারণা চালিয়েছিল। এখনো পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রচারণায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে না। জামায়াত বিএনপি এদেশে ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশে একটি অশ্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সেই ঘটনার অবসান ঘটানো হয়েছে। তবে এখন সমাজের বিভিন্ন স্থানে ঘাপটি মেরে থাকা সাম্প্রদায়িক ব্যক্তিরা বিভিন্ন জায়গায় সহিংস ঘটনা ঘটাচ্ছে।

দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সংখ্যালঘু নির্যাতন সংক্রান্ত ধারনাপত্র উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল।

অনুষ্ঠানে দিনাজপুর এবং বরিশালে ২০০১ এবং ২০১৪ সালে সংঘটিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের এলাকার থেকে নির্যাতনের শিকার রনজিত কুমার রায়, পুরেন দাস, সংবাদকর্মী কল্যাণ কুমার চন্দ, সংবাদকর্মী আজহারুল আজাদ জুয়েল এবং খালেদা আক্তার হেনা তাদের নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন। বরিশালের উজিরপুরের নির্যাতিত রনজিত কুমার রায় তার বক্তব্য রাখার সময় অঝোরে কেঁদে ফেলেন। এ সময় সমগ্র অনুষ্ঠানস্থলে পিনপতন নিরবতা নেমে আসে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, এখন পর্যন্ত দেশে জাতীয় নির্বাচনের সময় নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব হয়নি। এটা নির্বাচনী কাজের সঙ্গে জড়িতদের ব্যর্থতা। সংখ্যালঘুদের হতাশ হলে চলবে না, নিজেদের দাবি আদায়ে নিজেদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে।

সুলতানা কামাল বলেন, আগামী নির্বাচনে কোনো সাম্প্রদায়িক ব্যক্তিকে কেউ মনোনয়ন দিবেন না। কারণ, ওই সকল সাম্প্রদায়িক ব্যাক্তিরাই সাম্প্রদায়িকতা ছড়ায়। যদি দেওয়া হয়, তাহেলে তাকে প্ররোধ করার জন্য তিনি সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান। নির্বাচনের সময় সংখ্যালঘু নির্যাতিত হলে প্রতিরোধে যা প্রয়োজন সেই ব্যবস্থাই গ্রহণ করতে হবে।

তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠি ক্ষমতায় থাকায় তখনকার সংখ্যালঘু নির্যাতনের কোনো বিচার তারা করেনি। কিন্তু ২০১৪ সালে কি হলো। তখনতো স্বাধীনতার স্বপক্ষ দাবিদার শক্তি ক্ষমতায় তারা কেন সেদিনের নির্যাতনের ব্যাপারে কোনো বিচার আজ পর্যন্ত করল না।

তিনি বলেন, ক্ষমতায় গেলে সকল দলের চরিত্রই এক। আর এজন্য আমরা হাল ছেড়ে দেব না। কারণ বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়ে দেশ স্বাধীন করতে অবদান রেখেছি। সেই অবদানের বলেই আগামী দিনেও সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিরোধে সচেষ্ট থাকব।

রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী প্রচারনায় সংখ্যালঘু নিরাপত্তার বিষয় থাকতে হবে: মেনন

রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী প্রচারনায় সংখ্যালঘু নিরাপত্তার বিষয় থাকতে হবে: মেনন
November 8, 201822
Share on Facebook Tweet on Twitter
রাজনৈতিক দলগুলোরসংবাদচর্চা রিপোর্ট:

সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপি বলেছেন, প্রত্যেক এলাকার সকল স্তরের রাজনৈতিক নেতৃত্বের দায়িত্ব সে এলাকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেয়ার। দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে একটি বৈষম্য বিরোধী আইন ও সংখ্যালঘু কমিশন গঠিত হবে। পাকিস্তান শাসনামল থেকেই সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চলে আসছে, যা অন্বীকার করার কোন উপায় নেই। বিভিন্ন ক্ষেত্রেই এখন আমাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার প্রকাশ ঘটছে। ২০০১ সালের নির্বাচনে সারাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও সরকার এর কোন দায় না নিয়ে বরং দেশে কোন ঘটনা ঘটে নাই বলে প্রচারনা চালিয়েছিল। এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রচারনায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে না। তিনি বলেন, জামায়াত বিএনপি এদেশে ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশে একটি অশ্বস্তির পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সেই ঘটনার অবসান ঘটানো হয়েছে। তবে এখন সমাজের বিভিন্ন স্থানে ঘাপটি মেরে থাকা সাম্প্রদায়িক ব্যাক্তিরা বিভিন্ন জায়গায় সহিংস ঘটনা ঘটাচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে মানবাধিকার সংগঠন শারি’র আয়োজনে “জাতীয় নির্বাচন ২০১৮ ও সংখ্যালঘু নিরাপত্তা” শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় রাশেদ খান মেনন উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
শারি’র নির্বাহী পরিচালক প্রিয় বালা বিশ্বাসের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, মানবাধিকারকর্মী এ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, মানবাধিকারকর্মী ড. মেঘনা গুহ ঠাকুরতা, দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান, দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের যুগ্ম সম্পাদক বিভুরঞ্জন সরকার, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ সভাপতি নির্মল রোজারিও। দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সংখ্যালঘু নির্যাতন সংক্রান্ত ধারনাপত্র উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল। অনুষ্ঠানে দিনাজপুর এবং বরিশালে ২০০১ এবং ২০১৪ সালে সংঘটিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের এলাকার থেকে নির্যাতনের শিকার রনজিত কুমার রায়, পুরেন দাস, সংবাদকর্মী কল্যাণ কুমার চন্দ, সংবাদকর্মী আজহারুল আজাদ জুয়েল এবং খালেদা আক্তার হেনা তাদের নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন। বরিশালের উজিরপুরের নির্যাতিত রনজিত কুমার রায় তার বক্তব্য রাখার সময় অঝোরে কেঁদে ফেলেন। এ সময় সমগ্র অনুষ্ঠানস্থলে পিনপতন নিরবতা নেমে আসে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, এখনও পর্যন্ত দেশে জাতীয় নির্বাচনের সময় নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব হয়নি। এটা নির্বাচনী কাজের সাথে জড়িতদের ব্যর্থতা। সংখ্যালঘুদের হতাশ হলে চলবে না, নিজেদের দাবি আদায়ে নিজেদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, আগামী নির্বাচনে কোন সাম্পৃদায়িক ব্যাক্তিকে কেউ মনোনয়ন দিবেন না। কারন ওই সকল সাম্প্রদায়িক ব্যাক্তিরাই সাম্প্রদায়িকতা ছড়ায়। যদি দেয়া হয়, তাহেলে তাকে প্রেিরাধ করার জন্য তিনি সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান। নির্বাচনের সময় সংখ্যালঘু নির্যাতিত হলে প্রতিরোধে যা প্রয়োজন সেই ব্যবস্থাই গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ক্ষমতায় থাকায় তখনকার সংখ্যালঘু নির্যাতনের কোন বিচার তারা করেনি। কিন্তু ২০১৪ সালে কি হ’ল। তখনতো স্বাধীনতার স্বপক্ষ দাবিদার শক্তি ক্ষমতায় তারা কেন সেদিনের নির্যাতনের ব্যাপাওে কোন বিচার আজ পর্যন্ত করলা না। তিনি বলেন, ক্ষমতায় গেলে সকল দলের চরিত্রই এক। আর এজন্য আমরা হাল ছেড়ে দেবনা। কারন বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়ে দেশ স্বাধীন করতে অবদান রেখেছি। সেই অবদানের বলেই আগামী দিনেও সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিরোধে সচেষ্ট থাকব। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, নির্বাচন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের জন্য কোন উৎসব নয়, বিপদের বার্তা নিয়ে আসে। ২০০১ সালের নির্বাচনের পরে সংখ্যালঘুদেও উপর হামলার বিষয়ে তৎকালীন সরকারের ২৯জন মন্ত্রী সরাসরি জড়িত ছিলেন। এ ব্যাপারে একটি কমিশনও গঠিত হয়েছিল। কিন্তু কোন অজ্ঞাত কারনে তা আর আলোর মুখ দেখেনি। তিনি বলেন, কোন সাম্প্রদায়িক ব্যাক্তিকে কেউ মনোনয়ন দিলে সেই এলাকার সংখ্যালঘুরা তাকে ভোট দিবে না। আর এ ব্যাপারে যদি কোন ঘটনা ঘটে সেই দায় দায়িত্ব ওই দলকেই নেত হবে।