দলিতদের উদ্দেশ্যে আনোয়ার: নিজেদের ছোট ভাববেন না

দলিতদের উদ্দেশ্যে আনোয়ার: নিজেদের ছোট ভাববেন না
x

Decrease font Enlarge font
01টাইমস নারায়ণগঞ্জ: দলিত সম্প্রদায়কে নিজেদের ছোট করে না দেখার আহবান জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়াম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকার সকল ধর্ম ও গোত্রের মানুষকে নিয়েই উন্নয়নের মহাসড়কে উঠার পরিকল্পনা করছে। আমাদেরকেও সেই উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় অংশগ্রহন করতে হবে। সুতারং নিজেদেরকে ছোট ভাবা যাবে না।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে শহরের আলী আহমদ চুনকা পাঠাগারে দাতা সংস্থা ব্রেড ফর দ্যা ওয়াল্ড এর সহযোগিতায় শারি সংস্থা ও বাংলাদেশ দলিত পঞ্চায়েত ফোরামের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত নারায়ণগঞ্জের দলিত সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠিকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্তকরণে রাষ্ট্র ও আমাদের করণীয় শীর্ষক গোল টেবিল আলোচনায় প্রধাণ অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

আলহাজ¦ আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরিছিলাম সকল ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে বাঙ্গালী জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে। তখন আমরা সকল ধর্মের মানুষ এক কাতারে থেকে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছি, আমাদের মধ্যে কোন জাতিগত ভেদাভেদ ছিলো না। একটি অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়েই বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সেই অসম্প্রায়িত চেতনা থেকে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আপনারা আছেন বলেই আমরা আজ সুস্থ্য ও পরিচ্ছন্নভাবে সমাজে চলতে পারি। আপনারও সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ গঠনে অংশগ্রহন করতে পারেন।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আনোয়ার হোসেন তাদের জেলা পরিষদের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বেকার যুবক-যুবতীদের কম্পিউটার, সেলাই কাজের, বিউটি পার্লারেরর কাজসহ নানা ধরনের কারিগরি শিক্ষা দেওয়া হয় বিনা মূল্যে। আপনারাও এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদেরকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে পারেন। এবং নিজেদের স্বাবলম্বী করার পাশাপাশি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার পথে অংশগ্রহন করতে পারেন।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর পূজা উদযাপণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, দলিত সম্প্রদায় কথাটি ব্রিটিশ আমলে সৃষ্টি হয়েছিলো। তৎকালীণ বৃটিশ সরকার আমাদেরকে শোষন করার জন্য এই জাতিভেদ প্রথার সৃষ্টি করেছিলো। যাতে করে এই জাতিগত বিভেদের কারনে আমরা নিজেরা কোন্দলে জড়িয়ে পরি আর সেই সুযোগে তারা আমাদেরকে লুন্ঠন করতে পারে। কিন্তু ১৯৪৯ সালে জমিদারী প্রথা বাতিলের সাথে সাথে এই জাতিভেদ প্রথাও বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এখন এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে জাতিগত ভেদাভেদ তুলে ধরে নিজেদেরকে ছোট ভাবার কোনই অবকাশ নেই।

তিনি আরও বলেন, ভারতের বর্তমান প্রধাণমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই দলিত সম্প্রদায়ের লোক। নিজ মেধা ও পরিশ্রমের কারনে তিনি আজ ভারতের মতো দেশের প্রধাণমন্ত্রী হতে পেরেছেন। আপনাদেরকেও আর পিছিয়ে থাকলে চলবে না। আপনাদেরকে নিজ মেধা বিকাশের মাধ্যমে সমাজের মূল ¯্রােতের সাথে মিশে যেতে হবে। বাংলাদেশ দলিত পঞ্চায়েত ফোরাম জেলার সভাপতি প্রদীত চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ জেলার সভাপতি শংকর সাহা, সমাজ সেবা কার্যালয়ের শহর সমাজ সেবা কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার, যুব উন্নয়ন কার্যালয়ের উপ-পরিচালক কেএম শাহরিয়ার রেজা, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন প্রধান সমাজ কল্যান ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা রফিদুল মিরাজ, মহিলা বিষয় কার্যালয়ের প্রোগাম অফিসার নাজনীন আফরোজ প্রমুখ।

প্রকল্পের সমন্বয়কারী উমেশ সাহার সঞ্চালনায় মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করনে আয়োজিত সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রিপন চন্দ্র দাস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শারি সংস্থার নির্বাহী পরিচালক প্রিয় বালা বিশ্বাস।