নির্বাচনী ইশতেহারে সংখ্যালঘু নিরাপত্তা থাকতে হবে: মেনন

নির্বাচনী ইশতেহারে সংখ্যালঘু নিরাপত্তা থাকতে হবে: মেনন
স্টাফ ক‌রেসপ‌ন্ডেন্ট
৮ নভেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার
প্রকাশিত: 4:27 আপডেট: 4:39

নির্বাচনী ইশতেহারে সংখ্যালঘু নিরাপত্তা থাকতে হবে: মেনন
রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে সংখ্যালঘু নিরাপত্তার বিষয় উল্লেখ থাকতে হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। ‌তি‌নি বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে এবং নির্বাচনের পরে সংখ্যালঘুদের উপর নানা হয়রানি হয়ে থাকে। তাই সকল রাজনৈতিক দলগুলো‌কে এ ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৮ ন‌ভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ভিআই‌পি লাউঞ্জে ‘শারি’র আয়োজনে ‘জাতীয় নির্বাচন ২০১৮ ও সংখ্যালঘু নিরাপত্তা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চলছে, বিশেষ করে ২০০১ সালের নির্বাচনের পর সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের মাত্রা প্রকট আকার ধারণ করেছে। নির্বাচনের যে প্রার্থী জয়ী হোক না কেন তার নিজ এলাকায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নজর রাখতে হবে।’

সংখ্যালঘু আইন প্রয়োজন দাবি করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সচেতন বলেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘুর পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের নিরাপত্তার জন্য অনেক আইন রয়েছে, তাই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য সংখ্যালঘু আইন করতে হবে।’

আলোচনা সভায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হোক বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন রোধে রাষ্ট্র, নির্বাচন কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে সচেতন হতো হবে। এবং প্রতিটি এলাকায় নিজ নিজ থেকে সভা করে সচেতনতা বাড়াতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ২৮এর ৪ ধারায় বলা আছে নারী-শিশু ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী আইন হতে পারে। এখন বাংলাদেশে নারী-শিশুদের নির্যাতন রোধে আইন রয়েছে তাই সংখ্যালঘুদের নির্যাতন রোধেও আইন হতে পারে।’

মানবাধিকার কর্মী এ্যাড. সুলতানা কামাল বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সময়ে সংখ্যালঘুরা জীবন মরণ খেলায় দোলে। নির্বাচন কারো জন্য হয় উৎসবমূখর আবার কারো জন্য হয় আতঙ্কের। তাই সকল রাজনৈতিক দলগুলো সংখ্যালঘুদের উপর বিশেষ নজর রাখতে হবে।’

বিএনপি সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে উদাসিন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিএনপি সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে উদাসিন তাদের যেন কোন বোধ নেই।’

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে সংখ্যালঘুদের কাছে ভোট ভিক্ষা করতে গিয়ে বলে আমাদের সহযোগিতা করুন আমরা আপনাদের মঙ্গলে কাজ করবো কিন্তু নির্বাচনের পর দেখা যায় চাঁদাবাজি, আর ভোগ দখলে মরিয়া।’

সভায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদাবাদ ইয়াসমিন বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করা দূর্ভাগ্যজনক। এই দেশ স্বাধীন হয়েছে সবার জন্য, কিন্তু বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ কেনো অস্তিত্বের জন্য লড়াই করতে হবে।’

তিনি নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘সামনের জাতীয় নির্বাচনে যেনো কোনে দল ধর্মকে ব্যবহার করে ফায়দা লুটতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে, এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য সকলকে নিজ নিজ থেকে ভুমিকা পালন করতে হবে।’

দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- মানবাধিকার সংগঠন রিইব এর নির্বাহী প্রধান ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, বাংলাদেশ হিন্দু- বৌদ্ধ- খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুনীরুজ্জামান প্রমুখ।

‌ব্রে‌কিং‌নিউজ/এএইচএস/জেআই