ভোটার তালিকার সঙ্গে আদমশুমারির সংখ্যার পার্থক্য রাষ্ট্রীয় প্রতারণা -ড. মিজানুর রহমান

ভোটার তালিকার সঙ্গে আদমশুমারির সংখ্যার পার্থক্য রাষ্ট্রীয় প্রতারণা -ড. মিজানুর রহমান
প্রকাশিত: সোমবার ১৪ মার্চ ২০১১ | প্রিন্ট সংস্করণ

inShare

স্টাফ রিপোর্টার : মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, ভোটার তালিকার সঙ্গে আদমশুমারির সংখ্যার পার্থক্য রাষ্ট্রীয় প্রতারণা। যে কোনো সম্প্রদায়ের লোককে রাজনীতিবিদদের স্বার্থে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলেও তাদের আদমশুমারিতে না নেয়াটা এক ধরনের প্রতারণা। এ ধরনের প্রতারণা থেকে বের হয়ে আসার জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান। গতকাল রোববার সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘শারি’ আয়োজিত জাতীয় সংলাপে তিনি একথা বলেন। দলিত সম্প্রদায়কে সরকারের জনগণনায় পেশাভিত্তিক অন্তর্ভুক্তির দাবিতে এ জাতীয় সংলাপের আয়োজন করা হয়। শারি’র কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি কৃষিবিজ্ঞানী ড. গুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন বিচারপতি গোলাম রাববানী, গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল বারকাত। প্যানেল আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. সাদিকা হালিম এবং বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রানা দাসগুপ্ত। শারি’র ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর রঞ্জন বকসী নুপু’র সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন শারি’র নির্বাহী পরিচালক প্রিয় বালা বিশ্বাস। ড. মিজানুর রহমান বলেন, সংবিধানের ৭ (১) ধারায় বলা হয়েছে জনগণ প্রজাতন্ত্রের মালিক। আদমশুমারিতে কাউকে নাম অন্তর্ভুক্ত করা না হলে তার নাগরিকত্ব এবং রাষ্ট্রের মালিকানা স্বত্ব থাকে না। যা এ ধারার লঙ্ঘন। তিনি আরো বলেন, গত আদমশুমারিতে বিশেষ একটি মহলের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে সরকার নিম্ন শ্রেণীর জনগোষ্ঠীর নাম অন্তর্ভুক্ত করেনি। বিচারপতি গোলাম রববানী দলিত সম্প্রদায়কে আদমশুমারির গণনায় অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, আদমশুমারিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া দেশের সকল নাগরিকের অধিকার। দলমত নির্বিশেষে সকলকে সরকার ঘোষিত আদমশুমারিতে অংশ নেয়ার সুযোগ করে আদমশুমারির গুরুত্ব সঠিকভাবে প্রতিফলিত হলে সকল মানুষই রাষ্ট্রিয় সুবিধা ভোগ করতে পারবে। আর যদি এক্ষেত্রে কোন ভুল থাকে তাহলে ওই ভুলের মাশুল সরকারকেই দিতে হয়। তিনি বলেন, দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য যদি তাদের পেশাভিত্তিক জনগণনা না হয় তাহলে ওই জনগোষ্ঠী পূর্বের ন্যায় আবারও সম্প্রদায়গতভাবে তার প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হতে পারে। অধ্যাপক আবুল বারাকাত বলেন, ৮৩টি আদিবাসী ও নিম্ন শ্রেণী গোষ্ঠীর মধ্যে ২৬টির নাম গত আদমশুমারিতে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। দেশের জনসংখ্যার সাথে ভোটার তালিকার একটি ব্যবধান রয়েছে। যে কারণে দেশে বর্তমানে কত লোক আছে তার কোনো সঠিক হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না।