ঊজ্জ্বল আগামীর স্বপ্ন দেখছে জুরাইন ঋষিপাড়ার যুবরা

ইভা পাল, প্রশিক্ষক,০৭ জানুয়ারী ২০১৯
অধিকার কেউ কাউেকে দেয় না, আদায় করে নিতে হয়। কথাটি সত্য। কিন্তু অধিকার শব্দটি একসময় অনেক দলিত এলাকার মতো জুরাইন ঋষিপাড়ার শান্ত, রাকেশ, প্রিয়াংকা আর শুক্লা নামের যুবদের কাছে খুবই অচেনা এবং সাহসের বিষয় ছিল। কারো কাছে ন্যায্য পাওনা বা জীবন পরিচালনায় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে ন্যায্য দাবী করা অধিকার তা যখন শারি সংস্থা কর্তৃক আয়োজিত মানবাধিকার সুরক্ষক প্রশিক্ষণ এ জানতে পারে। তখন থেকেই নিজের এবং সমাজের জন্য লড়ে যাওয়া, সচেতনতায় পথ চলা। কারণ এরা সকলই শারি সংস্থার মানবাধিকার সুরক্ষক ফোরামের সদস্য। তারই তাগিদে নিয়মিতভাবে শহর সমাজসেবা, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সিটি কর্পোরেশনসহ হাসপাতালে যোগাযোগ। আজকের এই সাফল্যতার পথে চলার গল্পটা তাদের নিজেদেরকে ঘিরে। বিগত জুন ২০১৮ ধুপখোলা সমাজসেবায় দক্ষতা উন্নয়ন (কম্পিউটার) প্রশিক্ষণের জন্য এলাকার ১০জন যুবকের তালিকা জমা দিলে, যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে নির্বাচিত হয় ০৪জন। বিগত ০৯ জুলাই ২০১৮ তারিখ হতে ধুপখোলা সমাজসেবায় ৫০দিনের বেসিক কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি হয়ে তারা সফলতার সাথে কোর্স সমাপ্ত করে ।

শান্ত দাস (১৯বছর)। নারায়ণগঞ্জ তুলারাম কলেজে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। পিতা প্রান বাবু দাস (৫০বছর) নতুন জুতা তৈরীর কাজ করেন এবং মাতা শ্যামলী রানী দাস (৪৫বছর) গৃহিনী। দুই ভাইবোনের মধ্যে শান্ত বড়। ৫০দিনের প্রশিক্ষণ কোর্সে সফল প্রশিক্ষণার্থী হিসাবে সমাজসেবা কার্যালয় থেকে ৩০০০০/=(ত্রিশ হাজার টাকা) অনুদান পেয়েছে।এখানেই থেমে থাকা না। অনুদানের টাকা দিয়ে কম্পিউটার কিনেছে।

শান্ত দাস
শান্ত দাস বলেন অনুদানের টাকা দিয়ে কম্পিউটার কেনার বিশেষ কারণ হচ্ছে ঘরে বসে আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে আয় করা যা তার লেখাপড়াকে চলমান রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আমার স্বপ্ন একজন দক্ষ ব্যাংকার হওয়া।

শুক্লা রানী ঘোষ (৩১বছর)। শারি সংস্থার শিক্ষা সেন্টারের শিক্ষক। পিতা মৃত: পরিমল চন্দ্র ঘোষ, মাতা বাসšিত রানী ঘোষ (৫৯বছর)। এসএসসি পাশের পর লেখাপড়ার সুযোগ হয়নি ছয় ভাইবোনের সংসারে শুক্লা। শারি সংস্থায় শিক্ষা সহায়ক সেন্টারের শিক্ষক হিসাবে কাজ করছেন। এক সন্তানের মা শুক্লা রানী দাস ।

শুক্লা রানী দাস
সন্তানকে আর্দশ মানুষ হিসাবে তৈরী করবে সে স্বপ্ন পূরণের জন্য বিকল্প আয়ের জন্য ৫০দিনের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কোর্স সমাপ্ত করেন। আর এই বিকল্প আয়ের সুযোগ সৃষ্টিতে সরকারী অনুদান ৩০০০০/=(ত্রিশ হাজার) টাকা সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে শুক্লা রানী মনে করেন।

রাকেশ দাস (১৯বছর)। কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ শাখায় দ্বাদশ শ্রেনীর ছাত্র। পিতা চন্দ্র শিখর দাস (৬৫)। কাঠমিস্ত্রির কাজ করেন। মাতা গঙ্গা রানী দাস(৬০) গৃহিণী। দুই ভাইবোনের মধ্যে জ্যেষ্ট।

রাকেশ দাস
রাকেশ দাস শেয়ার করে বর্তমান সময়ে কম্পিউটার শেখাটা একটা জরুরী বিষয়। তা লেখাপড়া চলাকালীন এমনকি যে কোন চাকরীতে যুক্ত হতে গেলে কম্পিউটার জানা চাই। আমার স্বপ্ন একটা ভাল চাকরী করা।

একইরকম ভাবে স্বপ্ন দেখছে, ভাল একটা চাকরী করবে প্রিয়াংকা রানী দাস(২০বছর), একটা কিন্ডার গার্টেনে চাকরীরত। পিতা দিপক চন্দ্র দাস (৪০বছর)। একটা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরী করেন। মাতা সবিতা রানী দাস (৩৫বছর) গৃহিণী।

প্রিয়াংকা রানী দাস
প্রশিক্ষণ শেষে অনুদানের (৩০০০০/=) টাকা দিয়ে একটা কম্পিউটার কিনে ঘরে বসে বিকল্প আয়ের পরিকল্পনা রয়েছে তার।