দুই সংগঠনের নিন্দা : চিরিরবন্দরে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা জামায়াত শিবিরের পরিকল্পিত

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে সংখ্যালঘু হিন্দু বসতবাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা, অগি্নসংযোগ ও লুণ্ঠনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এবং মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দক্ষিণ এশীয় গণসম্মিলন। গতকাল দুই সংগঠনের নেতারা এক যৌথ বিবৃতিতে নিন্দা জানান। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গত ৪ আগস্ট দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামে মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগি্নসংযোগ ও শ্লীলতাহানির নৃশংস ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা করছি। হামলায় আক্রান্তরা জানিয়েছে, এই নৃশংসতা ‘৭১-এর হামলার চেয়েও নির্মম এবং স্থানীয় জামায়াত নেতাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী তা করা হয়েছে। চিরিরবন্দর উপজেলা জামায়াত চেয়ারম্যান, জেলা জামায়াতের সাবেক আমিরের উসকানিমূলক বক্তব্যের পর জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে এই হামলা সংঘটিত করেছে’।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘হামলার জন্য এ পর্যন্ত আটজনকে গ্রেফতার এবং ইউএনও’কে প্রত্যাহার করা হলেও মূল উসকানিদাতা জামায়াতের স্থানীয় নেতাদের এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। ফলে জামায়াত নেতারা এখনো স্থানীয় হিন্দুদের ‘৭১-এর ভাষায় হুমকি দিচ্ছে এবং প্রাণ বাঁচাতে চাইলে ভারতে চলে যেতে বলছে’।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মনোযোগ ও হস্তক্ষেপ কামনা করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল এবং আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২০০১ সালের মতো সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টির জন্য জামায়াত সুপরিকল্পিতভাবে এ ধরনের সন্ত্রাসের পথ অবলম্বন করেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে ‘৭১-এর গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর বিচারের পাশাপাশি ২০০১-২০০৬ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা সারাদেশে সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপর যে হামলা করেছে এবং হত্যা, নির্যাতন, লুণ্ঠন ও অগি্নসংযোগের যেসব ঘটনা ঘটিয়েছে শাহাবুদ্দিন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তারও বিচার এই সরকারের মেয়াদকালে সম্পন্ন করতে হবে। এই বিচার না হলে ১৯৭১ ও ২০০১-এর যাবতীয় অপরাধের পুনরাবৃত্তি কোনক্রমেই রোধ করা যাবে না’।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, সাংবাদিক কামাল লোহানী, বিচারপতি সৈয়দ আমীরুল ইসলাম, অধ্যাপক অজয় রায়, সেক্টর কমান্ডার কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী, লেখক সৈয়দ শামসুল হক, অধ্যাপক অনুপম সেন, কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হক, শিল্পী হাশেম খান, শিল্পী রফিকুননবী, কথাশিল্পী আনোয়ারা সৈয়দ হক, নারীনেত্রী আয়শা খানম, স্থপতি রবিউল হুসেইন, লেখক শাহরিয়ার কবির, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, শহীদজায়া সালমা হক প্রমুখ।      

Reference