রামু ট্র্যাজেডি নিয়েও দোষারোপের রাজনীতি

গত ২৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার জেলার রামুতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপাসনালয় এবং বসতবাড়িতে নারকীয় উল্লাসে আক্রমণ করে যে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে, কোন কঠোর শব্দ প্রয়োগ করেই তার নিন্দা জানানো সম্ভব নয়। এক বৌদ্ধ তরুণ তার ফেসবুকে পবিত্র কোরআনের অবমাননা করেছে_ এই গুজব ছড়িয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করে বৌদ্ধদের ওপর সংঘটিতভাবে উন্মত্ততা চালানোর ঘটনাটিকে কোনভাবেই সাধারণ কোন বিষয় বলে মেনে নেয়া যায় না। মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার কারণে এটা ধর্মবিশ্বাসী মানুষদের স্বতঃস্ফূর্ত ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ নয়, এটা ছিল আসলে পরিকল্পিত সংঘবদ্ধ সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস। শান্তিপ্রিয়, নিরীহ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছে এ ধরনের আক্রমণ-হামলা ছিল অপ্রত্যাশিত। সেজন্য তারা বিস্ময়ে বিমূঢ়, দুঃখ ও ক্ষোভে ভারাক্রান্ত, লজ্জা ও বেদনায় মুহ্যমান। অগি্নসংযোগ, লুটপাট, ভাঙচুর করে, কেবল বৌদ্ধদের উপাসনালয় ও বসতবাড়ি ল-ভ- করেনি, ভেঙেচুরে তছনছ করেছে তাদের আস্থা ও বিশ্বাস। এমন বিবেকহীনতা, মূঢ়তা ও নির্বুদ্ধিতা যারা দেখিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানিয়ে কর্তব্য শেষ করার কোন সুযোগ নেই। প্রথম রাতে রামুতে এবং দ্বিতীয় দিন উখিয়া, টেকনাফ, পটিয়ায় বৌদ্ধ-হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বাড়িঘর আক্রান্ত হওয়ার পর দেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে যেরকম রাজনৈতিক-সামাজিক প্রতিরোধ প্রত্যাশিত ছিল, বাস্তবে তা হয়নি। রাজধানীসহ দেশের কোথাও কোথাও কিছু প্রতিবাদ-সমাবেশ, মানববন্ধন হয়েছে, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা রামুতে গিয়ে আক্রান্ত বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন, কিন্তু সেটা ক্ষত নিরাময়ে পর্যাপ্ত কিনা সে প্রশ্ন রয়েছে।
কারা, কী উদ্দেশ্যে ওই অপরাধ সংঘটিত করেছে, সেই সত্য উদঘাটন করার জন্য সমবেতভাবে উদ্যোগী হওয়ার পরিবর্তে দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল যেভাবে পরস্পরের প্রতি দোষারোপ করে বক্তৃতা-বিবৃতি দিচ্ছে, তাতে এটা মনে হয় না যে, আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ উন্নত করতে চায় কিংবা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপদে বসবাসের সুযোগ নিশ্চিত করতে তাদের আন্তরিক গরজ আছে। সংখ্যালঘুদের মনে আস্থা, বিশ্বাস ফিরিয়ে আনার চেয়ে তাদের নিয়ে রাজনীতি করাটাই প্রধান দুই দলের মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য থেকে এটা এখন অনেকেরই জানা যে, রামুতে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস সৃষ্টিতে এক ধরনের জাতীয় ঐকমত্য তৈরি হয়েছিল। কে বা কারা পরিকল্পনাক ারী, নেপথ্য মদতদাতা কে বা কারা সেসব নিয়ে বিতর্কের সুযোগ থাকলেও এটা স্পষ্ট যে, আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জামায়াত-রোহিঙ্গা সমবেতভাবেই বৌদ্ধদের বিরুদ্ধে উত্তেজনা ছড়াতে ভূমিকা রেখেছে, আক্রমণও চালিয়েছে যৌথভাবেই। ফেসবুকে একটি বিতর্কিত ছবি ট্যাগ করার ব্যাপারে বৌদ্ধ তরুণ উত্তম বড়ুয়ার সত্যি কোন ভূমিকা আছে কিনা, তা যাচাই-বাছাই না করেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থক অনেকেই যে মিছিল-মিটিং করে প্রাথমিকভাবে উত্তেজনা ছড়িয়েছে, সে খবর সবগুলো গণমাধ্যমেই প্রকাশিত হয়েছে। তারপরও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এসে ঘটনার জন্য দায়ী করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য, যিনি বিএনপি করেন। রামুর ঘটনায় বিএনপির সংসদ সদস্যের ‘হাত’ ছিল কিনা সেটা তদন্ত করে বের করার আগেই তাকে প্রধান হোতা হিসেবে চিহ্নিত করা খুব সুবিবেচনাপ্রসূত কাজ হয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যদি তার প্রাথমিক বক্তব্যে বলতেন যে, ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাক না কেন_ রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে, তাহলে মানুষের কাছে বিষয়টি যতটা সমর্থনযোগ্য হতো, তিনি কেবল বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্যের দিকে আঙ্গুল তোলায় সেটা হয়নি। তার এ একপেশে বক্তব্য স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছেও ভুল বার্তা পেঁৗছে দিয়েছে। তারা নিজেরা দেখেছেন, কারা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। কিন্তু ঘটনার পরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখ থেকে পক্ষপাতমূলক বক্তব্য শুনে তারা এটাই বুঝেছে যে, বিষয়টি নিয়ে যতটা রাজনীতি হবে, অপরাধীদের ধরা বা শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রে ততটা তৎপরতা দেখানো না-ও হতে পারে। ঘটনা সম্ভবত সেদিকেই যাচ্ছে।
রামু ট্র্যাজেডির ১০-১২ দিন পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে গিয়েছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথার প্রতিধ্বনি করে স্থানীয় বিএনপি এমপিকেই দায়ী করে সেখানে প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতাও করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে খুশি করতে বা আশ্বস্ত করতে পেরেছে বলে মনে হয় না। প্রধানমন্ত্রী যাই বলুন না কেন, রামু ট্র্যাজেডিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভূমিকা ছিল দুঃখজনক। ঘটনা যখন ঘটে তখনো যেমন আওয়ামী সমর্থক কারও কারও নেতিবাচক ভূমিকা ছিল, তেমনি ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরও স্থানীয় আওয়ামী লীগ দ্রুত ঐক্যবদ্ধভাবে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়েছে। এটা অস্বীকার করে বৌদ্ধদের আস্থা অর্জন করা যাবে না। যেসব আওয়ামী লীগ সমর্থক নেতাকর্মীকে নেতিবাচক ভূমিকায় দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রী রামু সফরে যাওয়ার আগে তাদের যদি গ্রেফতার করা হতো তাহলে বৌদ্ধ সম্প্রদায় হয়তো তাকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্বাগত জানাতে পারত। সেটা না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী রামু যাওয়ার পর তার সভাস্থলে বৌদ্ধদের উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম। কেন বৌদ্ধরা তাদের দুঃখ-বেদনা ও অন্তর্জ্বালার কথা বলার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছুটে গেলেন না, সেটা একটু খুঁজে দেখার চেষ্টা করা হবে কি?
রামুর ঘটনায় তাওয়া গরম করার কাজটি যদি কতিপয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থক করে থাকে, তাহলে রুটি ছেঁকার কাজটি সম্পন্ন করেছে বিএনপি-জামায়াত তথা সাম্প্রদায়িক শক্তি-গোষ্ঠী। রামু এবং অন্যান্য স্থানে বৌদ্ধ-হিন্দুদের ওপর আক্রমণের ঘটনাটি যে এক গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ তাতে কোনই সন্দেহ নেই। সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য নিয়ে এ ষড়যন্ত্র কে বা কারা করেছে, সেটা উপযুক্ত তদন্তের মাধ্যমে বের করা প্রয়োজন। কিন্তু এই প্রয়োজনীয় কাজটি করা হবে কিনা বলা মুশকিল। তবে এর পেছনে বিএনপি-জামায়াত যে বেশ ভালোভাবেই যুক্ত আছে তাতে যারা সন্দেহ প্রকাশ করেন, তারা সত্যকে আড়াল করার বদমতলব থেকেই সেটা করেন। রামু ইস্যুতে বিএনপির অবস্থান থেকেই বোঝা যায় যে, তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে এর জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে বিএনপি প্রচারণা শুরু করে দেয়, যেন বিএনপিই দেশে সংখ্যালঘুদের ত্রাণকর্তা। অথচ আক্রান্ত বৌদ্ধদের সহানুভূতি জানাতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নিজে রামু যাওয়ার কোন প্রয়োজনবোধ করলেন না। বিএনপির বাকপটু ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বক্তৃতা করে বলেছেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ হয়, তারা নিরাপদে বসবাস করতে পারে না। এই বক্তৃতা করার সময় তিনি ভুলে ছিলেন যে, ২০০১ সালে তারা ক্ষমতায় যাওয়ার পর পরই দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর কী দারুণ মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছিল। রামুর ঘটনার জন্য যদি শুধু আওয়ামী লীগই দায়ী হয় তাহলে বিএনপি সেখানে কি করেছিল? বিএনপির নেতাকর্মী কি বৌদ্ধদের পাশে দাঁড়িয়েছিল? আক্রমণকারীদের বাধা দিয়েছিল? এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, বিএনপির রাজনীতি সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মদত দিয়ে থাকে। বেগম জিয়া নিজেও একাধিকবার উসকানিমূলক বক্তৃতা নিয়ে সম্প্রীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। জামায়াতসহ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে জামায়াতের দহরমমহরম কারও অজানা নয়।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের নেতৃত্বে বিএনপির নয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গত ৫ ও ৬ অক্টোবর রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও পটিয়া পরিদর্শন করেন। তারপর গত ১২ অক্টোবর তারা একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। এটা একটি রাজনৈতিক ও পক্ষপাতদুষ্ট তদন্ত, তাতে কোন সন্দেহ নেই। এই তদন্ত প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত। তাই হামলার সময় সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে নীরব ছিল। ২৯ সেপ্টেম্বর রাত নয়টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা সেখানে কার্যত সরকারের উপস্থিতি ছিল না। তিনি বলেন, ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ৯টায় রামুতে শখানেক লোক মিছিল করে। প্রশাসন ইচ্ছা করলে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দিতে পারত কিন্তু তা করেনি। এরপর সহস্রাধিক লোক জড়ো হয়ে ভোররাত পাঁচটা পর্যন্ত অগি্নসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। পার্শ্ববর্তী উখিয়া, টেকনাফ ও চট্টগ্রামের পটিয়ায়ও একই ধরনের ঘটনা ঘটে। রামুর কেন্দ্রীয় সীমাবিহার থেকে থানার দূরত্ব মাত্র আধা কিলোমিটার। জেলা পুলিশ সদরের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার। আর সেনা ক্যাম্পের দূরত্ব চার কিলোমিটার। তারা কেউ পরিস্থিতি শান্ত বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে উদ্যোগী হয়নি। প্রশাসন সচেষ্ট হলে এই বর্বর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। বিএনপির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশকে জঙ্গিরাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকা এবং আগামী নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে, সরকারের মদতে পরিকল্পিতভাবে বৌদ্ধবিহার ও বসতিতে হামলা করা হয়েছে।
বিএনপির এ তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে স্বভাবতই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘যারা গুলশানের একটি বাড়ির লোভ সামলাতে পারে না, বিদেশিদের সঙ্গে প্রতারণা করে সেই বাড়ি বেহাত করে নেয়, যে ২০টা নামে অ্যাকাউন্ট খুলে এতবড় ফ্রড করে, যে দুর্নীতির জন্য জেল খাটে, জেনারেল এরশাদ যারে ক্ষমা-ঘেন্না করে মাফ করে দিয়ে আবার সঙ্গে ভিড়িয়ে নেয়, তার রিপোর্ট বাংলাদেশের মানুষের কাছে কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে?’ মওদুদের তদন্ত প্রতিবেদন যেমন মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না, তেমনি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যও কী প্রশংসিত হবে বা হচ্ছে?
এদিকে এক সপ্তাহের সফরে গত ১৪ অক্টোবর চীন গিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এ সম্পর্কে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, আওয়ামী লীগের আমলে দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় নিরাপদ নয়_ চীন সরকারের কাছে সেই নালিশ করতেই খালেদা জিয়া সে দেশে গেছেন। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে বিএনপির তদন্ত কমিটির তোলা ছবি, ঢাকায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৌদ্ধ নেতাদের তোলা ছবি ও বিএনপির তদন্ত কমিটির মনগড়া দলিল-দস্তাবেজ নিয়ে চীনে গেছেন বিরোধীদলীয় নেতা।
একেই বলে দোষারোপের রাজনীতি। রামুর ঘটনায় আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের যেখানে লজ্জিত ও বিব্রত হওয়া উচিত সেখানে তারা পরস্পরকে দোষারোপ করে বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে চলেছেন। এ প্রসঙ্গে রামুর ক্ষতিগ্রস্ত কেন্দ্রীয় সীমাবিহারের শ্রীমৎ প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষুর বক্তব্য উদ্ধৃত করেই আজকের আলোচনা শেষ করছি। গত ১০ অক্টোবর প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা শোকাহত-মর্মাহত কিন্তু এখনও আশাহত হইনি। আমরা সম্প্রীতি ও ভালোবাসার বন্ধনে এ দেশে বাঁচতে চাই। যা ঘটার, তা ঘটে গেছে। আমরা যা হারানোর, তা হারিয়েছি। নতুন করে হারানোর আর কিছু নেই, প্রাণ ছাড়া। ঘটনার পর এখন যা দেখা যাচ্ছে, তা আমাদের কাম্য নয়। এটিকে রাজনৈতিক ইস্যু করে সরকার ও বিরোধীদলের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি হোক, তা আমরা মোটেই কামনা করি না। আলোচনায় আসছে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ ও রোহিঙ্গা ইস্যু। প্রত্যক্ষদর্শী ও ঘটনার শিকার হিসেবে আমি বলব, রামুর এ সহিংস ঘটনার জন্য কোন নির্দিষ্ট একটি দল বা গোষ্ঠীকে দায়ী করা ঠিক হবে না। তদন্ত হওয়ার আগে থেকেই পারস্পরিক দোষারোপ চলতে থাকলে ঘটনার প্রকৃত রহস্য চাপা পড়ে যাবে, প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে যাবে। তাহলে এ ধরনের সহিংস ও সাম্প্রদায়িক অপরাধ রোধ করা যাবে না।’

Reference