সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজের হাত থেকে রক্ষা পেতে : টাঙ্গাইলের ১৩ হিন্দু পরিবারের থানায় আশ্রয়

গোপালপুর পৌরসভার চন্দবাড়ি গ্রামের হিন্দু পরিবারের সদস্যরা একদল সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজের হাতে এখন জিম্মি। সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে নানা অত্যাচার-নির্যাতনের পর এখন তাদের গ্রামছাড়া করার পাঁয়তারা করছে। পরিবারের সদস্যরা গত রোববার বিকেলে দলবেঁধে থানায় হাজির হয়ে জানমালের নিরাপত্তা চেয়ে এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবিতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগে গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা রংলাল চন্দ্র পাল বলেন, পার্শ্ববর্তী হাটবৈরাণ গ্রামের মৃত হাবিবের পুত্র ফারুখ, মৃত আছর আলীর পুত্র মনির এবং চন্দবাড়ি গ্রামের মৃত ইব্রাহীমের পুত্র লতিফ এবং ফজর আলীর পুত্র শরীফ সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে হিন্দু সমপ্রদায়ের কাছ থেকে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা আদায় করে আসছে। চাঁদা না দেয়ায় ইতিপূর্বে তারা বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে কয়েক দফা ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। বেশকজনকে মারপিটও করে। গত শনিবার সন্ত্রাসীরা পাড়ায় চড়াও হয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি এবং ১০ ঘণ্টার মধ্যে তা পরিশোধ না করলে সবাইকে গ্রামছাড়া এবং বউঝিদের উঠিয়ে নেয়ার হুমকি দিয়ে যায়। গ্রামের বাসিন্দা সুশীল চন্দ্র পাল জানান, মাটির পাত্রের চাহিদা না থাকায় এবং বিকিকিনি কমে যাওয়ায় এমনিতেই তাদের দিন ভালো যাচ্ছে না। তদুপরি চাঁদার দাবিতে গ্রাম ছাড়া অথবা প্রাণনাশের হুমকিতে সবাই হতাশ হয়ে পড়েছেন।

এ বিষয়ে পৌর কাউন্সিলর এবং আওয়ামী লীগ নেতা কিতাব আলী জানান, ‘ওরা আমাগোর দলেরই ছাওয়ালপাওয়াল। তবে ওরা বেশি বাইরা গেছে। নেতাগো কথা হুনতে চায় না। এজন্য ওদেরকে প্রশাসন দিয়া সাইজ করার জন্য হিন্দু পরিবারের লোকজনের সঙ্গে থানায় আইছি।’

উপজেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সুরুজ জানান, দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনে নামলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে গতকাল গোপালপুর থানার ওসি মমিনুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সুরুজ জানান, দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ হিন্দুদের নির্যাতনে নামলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরাধীরা কোন অবস্থায়ই রেহাই পাবে না । আমরা নিরীহ মানুষদের পক্ষে রয়েছি।

গোপালপুর থানার ওসি মনির হোসেন গতকাল জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পরই পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করার জন্য কয়েক দফা অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু তারা গা-ঢাকা দেয়ায় এখনও গ্রেফতার হয়নি। অভিযান অব্যাহত আছে। যে কোন সময় আসামিরা গ্রেফতার হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। ওসি জানান, বর্তমানে ওই হিন্দু পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাবোধ করছে বলে তাকে জানিয়েছে।

Reference