সীতাকুন্ডে জেলে পলি্লতে সন্ত্রাসী হামলা নারী-শিশু-বৃদ্ধসহ আহত শতাধিক

সীতাকু-ের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ ঘোড়ামরা গ্রামে জেলে পল্লীতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী-শিশু-বৃদ্ধসহ শতাধিক জেলে আহত হয়েছে। এ হামলায় বাদ পড়েনি দৃষ্টি ও বাকপ্রতিবন্ধী জেলে পরিবারের সদস্যরাও। এ ঘটনার প্রতিবাদে জেলেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ২ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। পরে পুলিশ এসে অবরোধ কারীদের উপর লাটি চার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এদিকে মহাসড়ক অবরোধের মুখে শত শত গাড়ি আটকা পড়ে হাজার হাজার ঘরমুখো মানুষকে অসহনীয় ভোগান্তী পোহাতে হয়েছে। এ ঘটনায় সীতাকু- থানায় কোন মামলা হয়নি। এদিকে খবর সংগ্রহ করতে গেলে দৈনিক যুগান্তরের সীতাকু- প্রতিনিধি এস এম ফোরকান আবুকে হাত-পা ভেঙে দেয়ার হুমকি দিয়েছে সীতাকু- থানার এক এস আই।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ ঘোড়ামরা (পাক্কা মসজিদ) এলাকায় স্থানীয় সন্ত্রাসী মুনছুরের নেতৃত্বে হেলাল, রাশেদসহ ৩০ জনের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী পিস্তল, কাটা রাইফেল, এলজি, রামদা, চাইনিজ কুড়াল, কিরিচসহ দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জেলে পলি্লতে হামলা শুরু করে। এভাবে ৩ ঘণ্টাব্যাপী তা-ব চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ বর্বরোচিত হামালায় বিটু রানী জলদাস (৩৬), যতীন্দ্র দাশ (৫০), হিরলাল দাশ (২২), মহমোনহন দাশ (৪৮), রবিবালা দাশ (২৫), তরণী দাশ (৩৫), পরিমল দাশ (২০), যতন দাশ (২৩), ধনঞ্জয় দাশ (৪৬), সাবিত্রি দাশ (৩৫), প্রতিবন্ধী ধনবাসি দাশ (৩০), সখি রানী (২০), রীনা বালা (১৮), রাখাল দাশ (৩০), রঙ্গি দেবী (৪০), উত্তম (১২), শিশুদাশ (৩৮), প্রতিবন্ধী বাসন্তী (৩০), মালু দাশ (২৫), বিধান দাশ (৫০), অর্জুন দাশ (৩০), পুতুল রানী (৫০), আরতি বালা (৫০), স্কুলছাত্রী বৃষ্টি জলদাশ (১২), কালাবাসি (৬০), হরিলাল দাশ, বুদ্ধি জলদাস, রোশন দাশসহ শতাধিক জেলে আহত হয়। এ সময় সন্ত্রাসীরা মহিলাদের শ্লীলতাহানীরও চেষ্টা করে। তা-ব চালিয়ে সন্ত্রাসীরা চলে গেলে জেলেরা একত্রিত হয়ে দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ব্যারিকেড দেয়। খবর পেয়ে সীতাকু- থানা পুলিশ, বারআউলিয়া হাইওয়ে থানা পুলিশের ৫০ সদস্য বিশিষ্ট একটি বাহিনী ঘটনাস্থলে এসে জেলেদের উপর লাটি চার্জ করে ব্যারিকেড তুলে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। ২ ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধের ফলে ঈদে ঘরমুখো মানুষ আটকা পড়ে অসহনীয় ভোগান্তিতে পড়ে। এদিকে দৈনিক যুগান্তরের সীতাকু- প্রতিনিধি এস এম ফোরকান আবু খবর সংগ্রহ করতে ঘটনাস্থলে গেলে সীতাকু- থানার এস আই মাসুদ তাকে মেরে হাড্ডি গুড্ডি ভেঙে দেয়ার হুমকি দেন।
এ ব্যাপারে আহত জেলে হরিলাল জলদাশ বলেন, সাগরের ৩নং পয়েন্টে বাপদাদার আমল থেকে জাল বসিয়ে মাছ ধরে আসছি। গত ১ সপ্তাহ আগে এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী মুনছুর ও কেডিএস গেটের সাবরিনা হোটেলের মালিক হেলাল দুজনে মিলে ৩টি মাছ ধরার ট্রলার কিনে তাদের জালের সামনে জাল ফেলে। তারা তাদের সাগরের অন্য জায়গায় জাল ফেলতে বলেন। এ কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে ১ সপ্তাহ ধরে তারা তাদের জাল একটার পর একটা কেটে সাগরে ফেলে দেয়। এ ঘটনায় জেলেরা এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কাছে বিচার চাইতে গেলে মুনছুরের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তাদের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়।
এ ব্যাপারে আরেক জেলে বুদ্ধি জলদাস বলেন, আমাদের প্রতিটি জালের দাম ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। সন্ত্রাসীরা জেলেদের ৩০-৪০টি জাল কেটে সাগরে ফেলে দিয়েছে। এর বিচার চাইতে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা শুরু করে।
সীতাকু- মডেল থানার এ এসপি শচীন চাকমা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সাগরে জাল বসানো নিয়ে ঝগড়ার একপর্যায়ে এক পক্ষ জেলে পল্লীতে হামলা করে।

Reference