মানবাধিকার কমিশন সকল সময় সংখ্যালঘুদের পাশে আছে : কাজী রিয়াজুল হক

মানবাধিকার কমিশন সকল সময় সংখ্যালঘুদের পাশে আছে : কাজী রিয়াজুল হক
Posted by: admin@admin.com 0 380 Views

pic 25.9.18

সংবাদ পরিক্রমা ডেক্স: “স্থানীয় সরকারের স্ট্যাংন্ডিং কমিটিতে দলিত ও সংখ্যালঘুদের অংশগ্রহণ এবং রাষ্ট্রের করণীয়” বিষয়ক মত বিনিময় সভা ২৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শারি’র আয়োজনে এবং ইউএনডিপি এইচআরপি’র সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক।

তিনি বলেন, সকল জনগোষ্ঠীর ন্যায্যতা প্রাপ্তিতে মানবাধিকার কমিশন সদা সর্বদা পাশে থাকবে। দলিতদের জন্য সরকারের সকল প্রকারের সামাজিক নিরাপত্তার সুযোগ রয়েছে। দলিত জনগোষ্ঠীকে সরকারের এই কাজ সম্পর্কে জানতে হবে এবং এই সুযোগ পেতে যথাস্থানে যেতে হবে। তিনি দলিত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদেরকে স্থাণীয় সরকারের সকল স্থায়ী কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করার জন্য সরকারের সাথে লবি করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নীতিগতভাবে একমত পোষণ করেন। দলিত ও হরিজন জনগোষ্ঠীকে স্থায়ী কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করলে তাদের সমস্যার বিষয়টি রাষ্ট্রের গোচরে আনা সম্ভব। আমি আগামী দিনে আপনাদের পাশে থেকে এই কাজে সহযোগিতা করবো।

তিনি বলেন, আমরা সংখ্যালঘু কমিশন গঠণ করার জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব দিচ্ছি। যেখানে সকল পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি থাকবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে এবং পরে যাতে করে কোন সংখ্যালঘু নির্যাতনের শিকার না হয় সেজন্য এখন থেকেই রাষ্ট্রকে ব্যাবস্থা নেয়ারও আহবান জানান। তিনি আশ্বস্ত করেন, সংখ্যালঘুদের উপর কোন নির্যাতন হলে অবশ্যই আমাকে মানবাধিকার কমিশনকে পাশে পাবেন।

শারি’র নির্বাহী পরিচালক প্রিয় বালা বিশ্বাস এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের যুগ্ম সম্পাদক বিভুরঞ্জন সরকার, গবেষক প্রতিমা পাল মজুমদার এবং দাতা সংস্থা ইউএনডিপি’র এইচআরপি প্রোগ্রামের ইনভেস্টিগেশন ও হিউম্যান রাইটস এক্সপার্ট লুবনা ইয়াসিণ। শারি’র এডভোকেসী কো-অর্ডিনেটর রঞ্জন বকসী নুপুর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ দলিত পঞ্চায়েত ফোরামের সভাপতি রামানন্দ দাস, বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদের মহাসচিব নির্মল দাস, বাংলাদেশ দলিত নারী আন্দোলনের সভাপতি বাসন্তী রানী দাস প্রমূখ।

বক্তারা দলিত জনগোষ্ঠীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং প্রাথমিকভাবে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতাধীন সকল কর্মসূচীতে দলিত জনগোষ্ঠীর বিশেষ বরাদ্দ প্রাপ্তির দাবী রাখেন। বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, প্রতিবন্ধিভাতা, শিক্ষা উপবৃত্তি, শিক্ষা বৃত্তি, ভিজিডি/ভিজিএফ কার্ড, শিক্ষা সহায়তা, কর্মসংস্থানে দক্ষতা বিকাশ প্রশিক্ষণ, ক্ষুদ্র ঋণ সহায়তা, নিরাপদ মাতৃত্ব সেবা, স্বাস্থ্য সেবা, কর্মজীবী নারীর মাতৃত্বকালীন ভাতা, গর্ভবতী মায়েদের গর্ভকালীন যত্ন ও সেবা ইত্যাদি বহুবিধ কল্যাণ মূলক সেবা দলিত জনগোষ্ঠীর নিরাপদ জীবন যাপনে একদিকে যেমন অপরিহার্য অন্যদিকে উন্নয়নে অংশগ্রহন নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি স্থাণীয় সরকারের সকল স্থায়ী কমিটিতে দলিত ও হরিজন জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভূক্তর মাধ্যমে এই জনগোষ্ঠীর কথা নিজেদেরকেই রাষ্ট্রের কাছে জানানোর সুযোগ প্রদানের দাবি জানান। প্রস্তাবিত ‘বৈষম্য বিলোপ আইন’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নসহ দলিতদের জন্য সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। তাদের বাসস্থান, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে, দলিত শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে ঝরে পড়া রোধ করতে হবে এবং তাদেরকে বিকল্প পেশায় নিয়ে আসতে হবে। সরকারের সকল মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরের পাশাপাশি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানসমুহকেও দলিতদের উন্নয়নে এগিয়ে আসতে হবে।